বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন
মোঃ আজাদ আলী, মোহনপুর প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার হাটতোড় গ্রামের উত্তর কান্দর বিলে ফসলের জমিতে পানি সেচ দেওয়াকে কেন্দ্র করে একই পরিবারের চারজনকে কুদাল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে হামলাকারী আরেক পরিবারের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যার আগমুহূর্তে এঘটনা ঘটে। এঘটনায় আহতরা হলেন, হাটতোড় গ্রামের মৃত হামেদ মন্ডলের ছেলে রুস্তম আলী (৫০)’ হাতের একটি আঙুল কোদালের কোপে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে’ , তার স্ত্রী আনুয়ারা বিবি (৪৫)’ মাথায় কোদালের কোপে গুরুতর জখম দুই স্থানে ১৫টি সেলায়’, তার ছেলে রাকিব উদ্দিন (১৮) মাথায় কোদালের কোপে ফেটে ৩টি সেলায়’ ও মেয়ে রাজীয়া সুলতানা (২১)’কে বেধড়ক পিটিয়েছে।’
আহত চারজনের তিন জন আশংকাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এব্যাপারে মোহনপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আহত পরিবার। অভিযুক্ত হামলাকারীরা হলেন, একই গ্রামের মৃত ইয়াছিন মন্ডলের ছেলে, দবির হোসেন, তার দুই ছেলে আকাশ ও একরামুল হোসেন ও দবিরের ভাই হবির আলী।যদিও হামলাকারীরা কোনরকম হতাহত ছাড়াই কৌশল করে আগেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আহত পরিবারটি।
সরোজমিনে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, হাটতোড় গ্রামের উত্তর কান্দর বিলের ডিপের ড্রেন থেকে ভুটভুটি দিয়ে উচু আলুর জমিতে পানি সেচদেন রুস্তম আলী ও তার ছেলে রাকিব হোসেন। এসময় ডিপের ড্রেনের চোরালিক দিয়ে সামান্য পানি যায় পার্শ্ববর্তী আলুর জমিতে। কিন্তু সামান্য ভেজা আলুর জমির মালিক একই গ্রামের দবির হোসেন ও তার দুই ছেলে না বুঝেই সেচদেয়া জমির মালিক রুস্তম আলী ও তার ছেলেকে কোদাল দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে রুস্তমের স্ত্রী ও মেয়ে জমিতে গেলে তাদেরকেও কোদাল দিয়ে কোপ দেয়। কোদালে কোপে রুস্তমের স্ত্রীর মাথায় গুরুতর জখম হলেও অল্পের জন্য বেঁচে যান মেয়ে রাজিয়া সুলতানা। তাকেও বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে দবির ও তার দুই ছেলে। এসময় দবিরের ভাই হবির আলী গিয়ে আবারও তাদেরকে পেটাই।
পরে আসেপাশে লোকজন এসে রুস্তম ও তার স্ত্রী ছেলেদের আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। ঐদিন রাতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আহতদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরদিন রবিবার সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেফার্ড করা হয়। বর্তমানে আহতরা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আহত পরিবারের আরেক ছেলে রকিব উদ্দিন।
প্রত্যক্ষদর্শী বেলাল হোসেন বলেন, ডিপের ড্রেনের যে স্থানে চোরা লিক হয়ে পানি গেছে তার অনেক পরে ভুটভুটি ফেলে জমি সেচ দেয় রুস্তম আলী। ড্রেনে চোরা লিক হতে পারে কিন্তু রুস্তম আলীর সেচের পানি হামলাকারী দবিরের জমিতে যায়নি। দবির না বুঝেয় এই হামলা করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য ও সরেজমিনে এর শতভাগ সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে হামলার ঘটনাকে পক্ষান্তর করতে আহতদের আগেই হাসপাতালে ভর্তি হন হামলাকারীরা। এমনি থানায় আহতদের আগেই অভিযোগ দেন হামলাকারীরা বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে মোহনপুর থানার মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই জাহেদ শেখ বলেন, আমি তদন্তে গিয়েছি। চিকিৎসাধিন দবির পরিবার আহত হয়েছে। তাদের একজনের হাত ভেংগে গেছে। আরেকজনের মাথায় জখম রয়েছে। এছাড়াও হাতে কিছু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর অপরপক্ষ রুস্তম পরিবার গুরুতর জখম হয়েছেন।
এবিষয়ে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply